দেবী আয়নাবাজি খ্যাত স্ক্রিপ্ট রাইটার অনম বিশ্বাসের প্রথম পরিচালিত ছবি। প্রযোজনায় আছেন আমাদের প্রিয় জয়া আহসান। তাছাড়া সরকারী অনুদান প্রাপ্ত ছবি। হুমায়ুন আহমদের দেবীর কথা চিন্তা করলেই তিনটা চরিত্র মাথায় আসে রানু, নীলু এবং মিসির আলী। এই তিনটি চরিত্রের উপর ভর করে এগিয়ে গিয়েছে অনম বিশ্বাসের ছবি ‘দেবী’।
দেবী শুরু হয় ১৭৫৮ সালের একটি ঘটনা প্রবাহ দিয়ে। যার লেজ ধরেই মূলত গোটা সিনেমাটা আগানো। শুরুটা বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল। বেশ নড়েচড়ে বসেছিলাম। কিন্তু অল্পকিছু সময় পর আগ্রহটা আবার হারিয়ে ফেললাম। ডার্ক হরর ফিল্মে অনুপম রায়ের মেকী গলার গান নিয়ে ভয়ে ছিলাম। যা ভয় পেয়েছিলাম তাই করলো। যখনি গল্পের ভিতরে ঢুকলো তখনি এরকম আচমকা গান। যদিও গান পুরোটা দেয় নি।এভাবেই গল্পের মোড়ক খুলে প্রথমার্ধের সমাপ্ত ঘটলো। ছবির দ্বিতীয়ার্ধ আমার বেশ ভালো লেগেছে। মূলত গল্পের ইন্টারেস্টিং অংশগুলো সব এখানেই। কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে বেশ তাড়াহুড়া করে ছবি শেষ করার একটা প্রচেষ্টা লক্ষণীয় ছিল। যারা ছবি দেখেছেন তারা বলতে পারবেন। বিশেষকরে ছবির শেষাংশের দৈর্ঘ্য আরেকটু ল্যান্থি করার প্রয়োজন ছিল। এছাড়াও উপন্যাসে যা ছিল গোটা ছবিতে ঠিক তাই রয়েছে। নতুন কিছু তেমন নেই। এক্ষেত্রে যারা নতুন কিছু খুঁজছিল আশাহত হয়েছি। গল্পের তেমন পরিবর্তন না হওয়ায় অনেকে আবার খুশিও হয়েছেন। ছবির গল্পের প্রাসঙ্গিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি দৃশ্যে করে মেটাল মিউজিক বেজে উঠেছিল। যা এই ছবির জন্রার সাথে সামঞ্জস্য। ডিউরেশন আরেকটু বেশী হলে ব্যক্তিগতভাবে এঞ্জয়েবল হতো। দেবী নিয়ে আমার এরকমই মিশ্র অনুভূতি।
নীলু চরিত্রে শবনাম ফারিয়ার কাস্টিং সবথেকে ভালো হয়েছে। প্রতিটি সংলাপের উচ্চারণ, এক্সপ্রেশন সবকিছু ভালো ছিল। এদিক থেকে আনিস সাহেব বা অনিমেষ আইচ এর চরিত্র বড্ড বেমানান। ডাইলগ ডেলিভারিতে নার্ভাসনেস, এক্সপ্রেশন বা বডি ল্যাঙ্গুয়েজে অপরিপক্বতা। সাথে জয়া আহসানের মত পটু অভিনেতা থাকার কারনেও এরকমটা হতে পারে। জয়া আহসানও যে এই ছবিতে খুব একটা ভালো করেছে তা নয়। রানু(জয়া) ও নীলুর(শবনাম ফারিয়া) সংলাপের একটি দৃশ্যে পাশের থেকে আমার ফ্রেন্ড বলে উঠলো জয়া এরকম লেসবো লেসবো লুক দিচ্ছে কেন। আমি আবার বললাম গল্পটা পড়ার সময় আমারও এরকমটা মনে হয়েছিল। জয়া আহসান ভালো অভিনেত্রী। উনার ক্ষেত্রে এরকমটা হওয়ার কারন হচ্ছে চরিত্রটাকে বেশী সিরিয়াসলি নেওয়া। যারফলে কিছুটা ওভারএক্টিং চোখে পরেছে। দোষটা অবশ্য পরিচালকের। এগুলো খেয়াল করা উচিৎ ছিল। তাছাড়া বেশকয়েক যায়গার এক্সপ্রেশন তাকিয়ে থাকার মতো ছিল। মিসির আলী চরিত্রে চঞ্চলকে অনেকেই মানতে নারাজ। আমার আবার মন্দ লাগে নাি। বইয়ের মতোই হতে হবে এমনতও কোন নিয়ম নেই। চঞ্চলের ভয়েজটা আমার ভালো লেগেছে। অন্যদের কেমন লাগলো জানি না। দর্শক হাসানোর জন্য কিছু কিছু যায়গায় মিসির আলী চরিত্রকে লেইমভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যা দৃষ্টিকটু লাগলো। তাছাড়া ব্যক্তিগতভাবে মিসির আলীকে নিয়ে আমার কোন আক্ষেপ নেই। তবে মিসির আলীর জ্ঞানের পরিধি এখানে ভালোভাবে প্রকাশিত হয় নি। যেরকমটা আমরা বইয়ে পড়েছি। শেষাংশে আরেকটু সময় দিলে ইরেশ জাকের এর চরিত্রটা আরেকটু সুন্দরভাবে জাস্টিফাই হতো।
ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ভালো ছিল। এডিটিং এ ছিলেন শিমুল চন্দ্র বিশ্বাস।যথেষ্ট ভাল কাজ করেছেন শিমুল দা। সাউন্ড এর ব্যাপারটা যারা স্টার সিনেপ্লোক্সে দেখেছেন তারা হয়তো আরও ভালো উপভোগ করেছেন। গোটা ছবিতে ডার্ক টোন ছিল। আন্তর্জাতিক ছবির মান হিসেবে আহামরি না হলেও, বাংলাদেশের এই প্রথম এই জন্রার কাজ হিসেবে, বেশ ভালো কাজ। এই ধাচের কাজ আরও হোক এমনটাই চাচ্ছি।
https://www.youtube.com/watch?v=_v9eIPXXBig&t=10s
https://www.youtube.com/watch?v=_v9eIPXXBig&t=10s
Debi Download link : হলে গিয়ে দেখে আসুন।
Very good review. I agreed with most of the things you said.
ReplyDeleteThanks for reading... It's a good film but it could be a better film cause it had lots of opportunity to portrait brilliantly.
Deleteদেবী গল্পটার শেষাংশও আমার কাছে তাড়াহুড়া লেগেছিলো পড়ার সময়।
ReplyDeleteআমার অবশ্য এতোটা মনে হয় নি। বাট ইচ্ছা করলেই ছবিটা আরও নান্দনিক করা যেত। তাছাড়া মিসির আলির অনুসন্ধানেও থ্রিল নিয়ে আসতে পারতেন।
Delete