Saturday 28 October 2017

ডুবে কি ডুব দিতে পেরেছি?

ডুবের ট্রেইলার দেখেই বুঝা যায়, ডুব যথেষ্ট স্লো মুভি হবে। যারা স্লো স্লো বলে চিল্লাচ্ছেন তারা কি ট্রেইলার না দেখেই মুভি দেখতে গিয়েছিলেন?
আচ্ছা বাদ দেন আমি আমার ভালো লাগা খারাপ লাগাগুলো একটু আলোচনা করি। প্রথমে একটা কথা বলে রাখি মুভির যে হাইপ পরিচালক তুলেছিলেন তার ধারে কাছেও ডুব নেই। তাই বলে কি ডুব খারাপ ছবি, ডুব অখাদ্য ছিল। মোটেও না, বরংচ কোন কোন ক্ষেত্রে ফারুকীর অন্যান্য ছবি থেকে এগিয়ে।
মুভির প্রথমার্ধে মুভি সম্পর্কে একটা পজিটিভ ইমেইজ তৈরি হচ্ছিল ধিরে ধিরে। মনে হচ্ছিল বাহ বেশতো। এরকম মুভিইতো চাচ্ছিলাম। বেশকয়েকটা ক্যামেরার কাজ প্রশংসনীয়।আবার কয়েকটা দৃষ্টিকটু মনে হচ্ছিল। গল্প বলার ধরনটাও ভালো লাগছিল। শুধু আমি না আমার সাথে যে ফ্রেন্ড ছিল তারও একই অভিমত। হলের সুবাদে অন্যান্য দর্শকের মতামতও জানা যায়। বেশ পজিটিভ রেস্পন্স পাচ্ছিলাম। শুধু আমার সামনের সারির লোকদের দেখছিলাম বার বার নাটক নাটক বলতেছিল। এই প্রসঙ্গটা যেহেতু আসলো বলে রাখি মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর একটা অপবাদ আছে, ফারুকী নাকি মুভি বানায় না নাটক বা টেলিফিল্ম বানায়। ডুব দেখে যদি কেউ ডুবকে নাটক বলে তাহলে আমি বলবো ভাই ড্রামা জনরা প্লিজ এভয়েট করেন। ফারুকীর বেস্ট সিনেমেটোগ্রাফি দেখেছি ডুবে। কালার গ্রেডিং, পিকচারাইজেশন এভরিথিং ইজ ওকে। আর আবহ সঙ্গীতের কথা কী বলবো, চরিত্রগুলোকে আরো গভীরে নিয়ে যাচ্ছিল।

সবায় বলতে পারেন সবিতো পজিটিভ বলছেন, তাহলে খারাপ লাগলো কেন?
প্রথমার্ধে যেরকম ভাল লাগা কাজ করছিল, শেষার্ধে তার ঠিক উল্টোটা মনে হচ্ছিল। সত্য কথা বলতে স্লো মুভির ফ্যান হয়েও বোর ফিল করছিলাম। চরিত্রগুলো আর টানছে না। জাভেদ হাছান মানে ইরফান খান মারা গেল আমার মনে বেদনা কাজ করছে না। প্রথম ফ্যামিলির সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না, আমি তেমন কোন অনুভূতি ফিল করতে পারছিলাম না। যেমনটা পেরেছিলাম প্রথমার্ধে বাবা মেয়ের সম্পর্কে। শেষের দিকে খুব তারাহুরা করেছে। মনে হচ্ছিল পরিচালক গল্পটা কোন রকম শেষ করতে পারলেই বাঁচে।
**মুভির সবচেয়ে ভাল লাগা দিক: প্লট সবায় কম বেশী জানেন। জাভেদ হাছান এর সাথে তার প্রথম ফ্যামিলি বিচ্ছেদের পর তাদের ঘুরে দাড়ানোর বিষয়টা খুব ভাল লেগেছে। একটা মহিলা একা তার প্রাক্তন হাজব্যান্ড এর সাহায্য ছাড়া যেভাবে সংসারটা আগলে ধরেছে এ বিষয়টা খুব নাড়া দিয়েছে। মনে হচ্ছিল প্রত্যেকটা দৃশ্য বলে দিচ্ছে হ্যাঁ, আমরা তোমাকে ছাড়াও অনেক ভাল থাকতে পারি।তুমার সহায়তা দরকার নেই। তুমি তুমার মতো থাাক। আরেকটা বিষয় একদম শেষের দিকে যখন প্রথম স্ত্রীর কাছে জাভেদ হাছান( ইরফান খান) এর মৃত্যুর সংবাদ আসে তাদের যে প্রতিক্রিয়া ছিল অসাধারন।
**মুভির সবচেয়ে দুর্বল বা খারাপ লাগা দিক: চিত্রনাট্যে আহামরি কিছু নেই। এতোটা সুযোগ থাকার পর, যেহেতু অফিশিয়াল বায়োপিক না এরকম চিত্রনাট্য হওয়ার কোন মানে হয় না। গল্পটাকে আরো সুন্দরভাবে সাজানোর অনেক স্কুপ ছিল। আরো সুন্দর ফিকশনাইজড করতে পারতেন। তা না করে উনি কী করেছেন, ওই আমরা পত্রিকায়, মানুষের মুখে মুখে হুময়ুন আহমেদ নিয়ে যা যা শুনেছি সব তুলে দিয়েছেন। কোন প্রকার রিসার্চ ছাড়া চিত্রনাট্য লিখলে যা হয়। যে কেউ দেখলে বুঝবেন যে এক বসাতেই লেখা হয়েছে। 

আমরা, বিশেষ করে আমি এই হুমায়ুন ইস্যু নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত। সেই কবে থেকেই এই ইস্যু নিয়ে তর্ক বিতর্ক করে আসছি। আবারো সেইম জিনিশ একটু গল্প আকারে পর্দায় দেখলাম এই যা।
যাইহোক বাংলা মুভি বিবেচনায় ১০ এ ৭ দিলাম।

No comments:

Post a Comment

LIVE FROM DHAKA | ABDULLAH MUHAMMAD SAAD | MEDIASCOPE

LIVE FROM DHAKA “ আমি কোন নবি-রাসূল নয়, আমি একটা মানুষ, আমার সহ্যের একটা লিমিট আছে।“ -       সাজ্জাদ  (লাইভ ফ্রম ঢাকা) আমাদের ...